খুলনা মেডিক্যাল কলেজে মেধাতালিকায় ভর্তির সুযোগ পাওয়ার পরেও অর্থনৈতিক কারণে শঙ্কায় থাকা সেই মেধাবী ইমন কাজীর দরিদ্র মা-বাবার স্বপ্ন পূরণ হতে চলছে। এবার ইমন কাজীকে আর্থিক সহযোগীতা করে পাশে থাকার আশ্বাস দিলেন কুমিল্লা জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোঃ আমিরুল কায়সার ও ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা প্রশাসন। ‘অর্থের অভাবে মেডিক্যাল অনিশ্চিত ইমনের’ শিরোনামে কয়েকদিন আগে সংবাদ প্রকাশ করে দৈনিক কলের কণ্ঠ সহ অন্যান্য পত্রিকা। কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ার উপজেলার সিদলাই ইউনিয়নের বেড়াখলা গ্রামের দিনমজুর কাজী মনিরুলের ছেলে ইমন কাজী। চলতি বছর মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে খুলনা মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন ইমন কাজী।তবে পরিবারের সবার চোখমুখে আনন্দ থাকলেও আড়ালে দেখা দেয় দুশ্চিন্তা ও অনিশ্চয়তা।এমন খবর পেয়ে সাংবাদিক আক্কাস আল মাহমুদ হৃদয় সরেজমিনে গিয়ে ইমন ও তার দরিদ্র পরিবারের সাথে কথা বলেন এবং সংবাদ প্রকাশ করেন। সংবাদটি প্রচারিত হলে জামায়াত নেতা এড.ড.মোবারক হোসেন,বিএনপি নেতা ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আসাদুজ্জামান মনির,গ্রীস প্রবাসী মুকুল হোসেন ও ‘আমরা এলাকাবাসী সংগঠন’ সহ বিভিন্ন লোকজন ইমন কাজীকে ভর্তির জন্য আর্থিক সহযোগীতা করেন। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল (২ ফেব্রুয়ারি) রোববার কুমিল্লা জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোঃ আমিরুল কায়সার ইমন কাজীকে ডেকে নিয়ে ৫০ হাজার নগদ দিয়ে পাশে থাকার আশ্বাস দেন এবং ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা ইউএনও মাহমুদা জাহান ৫ হাজার টাকা প্রদান করেন ও ফুলের শুভেচ্ছা জানান। ইমন কাজী বলেন,আমার মা-বাবার স্বপ্ন ছিল ডাক্তার হই।আমি খুলনা মেডিক্যালে ভর্তির সুযোগ পেয়ে টাকার জন্য চিন্তায় ছিলাম।সংবাদ প্রকাশের পর এখন কুমিল্লা ডিসি স্যার ও ইউএনও স্যার সহ কয়েকজনে আমার পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। এসময় তিনি সকলের কাছে দোয়া চেয়ে সকল গণমাধ্যমকে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানান। তারা প্রতিবেশীরা জানায়,ইমন কাজীর ভর্তির পর বই প্রয়োজন,খুলনা থাকা-খাওয়া সহ খরচ ব্যয়বহুল। যা ইমনের পরিবারের পক্ষে সম্ভব না এই দিকেও সকলের সহযোগীতা প্রয়োজন। উল্লেখ্য, মেধাবী এই শিক্ষার্থী ২০২২ সালে এসএসসি পরীক্ষায় পোমকাড়া সিদ্দিকুর রহমান অ্যান্ড হাকিম উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে পেয়েছেন গোল্ডেন জিপিএ-৫। ২০২৪ সালে বুড়িচং উপজেলার পারুরায়া আব্দুল মতিন খসরু কলেজ থেকে একমাত্র ইমন কাজীই গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়।চলতি বছরে সে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির সুযোগ পায়। ইমনের বাবা কাজী মনির (৫৫) একজন দিনমজুর ।তিনি এলাকার অন্যের জমিতে কাজ করে রোজগার করে সংসার চালান। মা মাহমুদা বেগম (৫০) গৃহিণী। দুই ভাই, দুই বোনের মধ্যে ইমন কাজী দ্বিতীয়। তার বড় বোন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে তৃতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত। তার ছোট বোন অনার্স ১ম বর্ষে অধ্যায়নরত, ছোট ভাই পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ছে।