কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া সরকারি হাসপাতালসহ নির্ধারিত টিকা কেন্দ্রে গিয়েও পাচ্ছে না শিশুদের জীবনরক্ষাকারী টিকা।এতে হুমকির মুখে পড়েছে কোমলমতি শিশুদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা।এমন অভিযোগ করেছেন সেবা নিতে আসা শিশুদের অভিভাবকরা।তবে হাসপাতালের স্বাস্থ্য বিভাগ দাবি করছে শিগগিরই টিকার এ সংকট কেটে যাবে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, শিশু মৃত্যুর হার ও পঙ্গুত্ব কমাতে শিশু জন্মের ৪২ দিন থেকে সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) আওতায় শিশুদের যক্ষ্মা, পোলিও মাইলাইটিস, ডিফথেরিয়া, হুপিং কাশি, মা ও নবজাতকের ধনুষ্টংকার, হেপাটাইটিস-বি, হিমোফাইলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা-বি জনিত রোগসমূহ, হাম, রুবেলা, নিউমোকক্কাল নিউমোনিয়া এই মারাত্মক ১০টি রোগ প্রতিরোধে প্রতিষেধক হিসেবে বিসিজি, পেন্টাভ্যালেন্ট, পিসিভি, এমআর, ওপিভি, আইপিভি ও টিটি (টিটেনাস টক্সয়েড) জাতীয় টিকা সরকারিভাবে বিনামূল্যে দেয়া হয়।তবে গত কয়েকমাস ধরে এসব টিকার মধ্যে পেন্টাভ্যালেন্ট, পিসিভি, আইপিভি এবং ওপিভি টিকার সংকট দেখা দিয়েছে। যার কারণে অধিকাংশ শিশুকে সময়মতো টিকা দিতে পরছে না কর্তৃপক্ষ। উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগে সেবা নিতে আসেন চান্দলা ইউনিয়নের বড়ধুশিয়া এলাকার বাসিন্দা হাসিনা আক্তার।তিনি বলেন,’আমার ছেলের বয়স ৩ মাস পেরিয়ে গেলেও মাত্র একটি টিকা পেয়েছে। টিকা কেন্দ্রে গেলে বলে টিকা নেই। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও গিয়েছিলাম, তারাও একই কথা বলেছে। আমি আমার বাচ্চার বাকি টিকাগুলো পাবো কি পাবো না এ নিয়ে আমি উদ্বিগ্ন’। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইপিআই কক্ষে আসেন আড়াই মাস বয়সী শিশু মুনতাহার মা শিরিন সুলতানা। তিনি বলেন, ‘এ নিয়ে কয়েকদিন এসেছি মেয়ের টিকা নেওয়ার জন্য। যখনই আসি এখান থেকে বলা হয় টিকা আসেনি। আমার আগের বাচ্চাগুলোর ক্ষেত্রে এরকম সমস্যা হয়নি। এবার এসে দেখি টিকা নাই’। উপজেলার দুলালপুর এলাকার বাসিন্দা ওমর ফারুক বলেন, ‘আমার নাতনি হুমাইরার ( ৩ মাস বয়স )তাকে টিকা এখনও দিতে পারিনি। টিকা কেন্দ্রে গেলে বলে টিকা নেই। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও গিয়েছিলাম, সেখানেও টিকা নেই। জানি না সময়মতো টিকা না দেওয়াতে পারলে কোনো সমস্যা হবে কি না। এ ব্যপারে ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবু হাসনাত মো. মহিউদ্দিন মুবিন বলেন, ইপিআই প্রোগ্রামের যেসব টিকা সরকার ক্রয় করে থাকে সেসব টিকা পর্যাপ্ত রয়েছে। তবে যেসব টিকা গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিনস অ্যান্ড ইমিউনাইজেশন বিনামূল্যে দিয়ে থাকে সেসব টিকার কিছুটা ঘাটতি রয়েছে। আশা করছি শিগগিরই এ সংকট কেটে যাবে।
