বীর মুক্তিযোদ্ধাকে জুতার মালা পরিয়ে হেনস্তা বীর মুক্তিযোদ্ধাকে জুতার মালা পরিয়ে হেনস্তা কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় এক বীর মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা পরিয়ে লাঞ্ছিত করার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল রবিবার দুপুরে উপজেলার কুলিয়ারা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে হেনস্তার শিকার হন বলে জানিয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই কানু। ওই ঘটনার ১ মিনিট ৪৬ সেকেন্ডের একটি ভিডিও গতকাল রাতে ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়লে অনেকেই বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। স্থানীয়রা বলছেন, মুক্তিযোদ্ধা কানু কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য। আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি মুজিবুল হকের রোষানলে পড়ে বিগত ৮ বছর এলাকায় যেতে পারেননি। বাড়িঘরে হামলা করাসহ একাধিক মামলা দেওয়া হয় ওই বীর মুক্তিযোদ্ধার নামে। গতকাল দুপুরে বাড়ির পাশের গ্রামে তাকে একা পেয়ে স্থানীয় অন্তত ১৫/২০ জন ব্যক্তি তাকে হেনস্তা করে গলায় জুতার মালা পরিয়ে দেয়। পরে তাকে লাঞ্ছিত করা হয়। তাদেরই একজন ঘটনার ভিডিও করেন। ৭৮ বছর বয়সী আব্দুল হাই কানুর বাড়ি চৌদ্দগ্রামের বাতিসা ইউনিয়নের লুদিয়ারা এলাকায়। তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। হেনস্তাকারীরাও একই এলাকার বাসিন্দা। ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়া ওই ভিডিওতে দেখা যায়, দুজন ব্যক্তি মুক্তিযোদ্ধার কানুর হাত টেনে সামনে নিয়ে যাচ্ছেন। কানুর গলায় রশি দিয়ে বাঁধা কয়েকটি জুতা দেখা যায়। তার আশপাশে ঘিরে ছিল আরো দশ-পনের লোকজন। একপর্যায়ে কানু জুতার মালা সরিয়ে এলাকায় থাকার আকুতি জানালেও তাকে এলাকা ছাড়ার হুমকি দিতে থাকেন ঘিরে থাকা লোকজন। ওই ব্যক্তিদের একজনকে বলতে শোনা যায়– “গ্রাম লোকের সামনে মাফ চাইতে পারবেন কি না?” তখন কানুকে দুই হাত উপরে তুলে মাফ চাইতে দেখা যায়। ঘটনার পর অসুস্থ অবস্থায় ওই মুক্তিযোদ্ধাকে ফেনীর একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘স্থানীয় প্রবাসী আবুল হাসেমের নেতৃত্বে অহিদ, রাসেল, পলাশসহ ১০ থেকে ১২ আমাকে একা পেয়ে জোর করে জুতার মালা গালায় দিয়ে ভিডিও করে। আমি বিগত সময়ে তাদের কোনো ক্ষতি করিনি।’ চিরনিদ্রায় শায়িত উপদেষ্টা হাসান আরিফচিরনিদ্রায় শায়িত উপদেষ্টা হাসান আরিফ থানায় অভিযোগ কেন দিতে চাইছেন না– এই প্রশ্নে আব্দুল হাই কানু বলেন, ‘বিচার কার কাছে চাইব, মামলা দিয়ে আর কী হবে? এমন বাংলাদেশের জন্যই কি জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করেছিলাম?’ এই ঘটনায় অভিযুক্ত আবুল হাসেম বা অন্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ টি এম আক্তারুজ্জামান বলেন, ‘বীর মুক্তিযোদ্ধাকে যারা লাঞ্ছিত করেছে, তাদের বিষয়ে খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ঘটনার পর ওই মুক্তিযোদ্ধা মোবাইল ফোনে বিষয়টি আমাকে জানিয়েছিলেন। তবে এ বিষয়ে তিনি লিখিত অভিযোগ করবেন না বলেও জানিয়েছেন। রাতে ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর আবারও তাকে অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। আমরা ঘটনায় জড়িতদের নাম-পরিচয় সংগ্রহ করছি। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

By তালাশ বাংলা ডেস্ক

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ আক্কাস আল মাহমুদ হৃদয়

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *