দুই শিশু সন্তানসহ বিষপানে মায়ের মৃত্যু

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই সন্তানকে বিষ পান করিয়ে নিজে আত্মহত্যা করেছে আইরিন আক্তার (৩২) নামে এক গৃহবধূ। বুধবার (০৬ মার্চ) দুপুরে পৌর এলাকার ভাদুঘর এলেমপাড়া থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্তের জন্যে পাঠিয়েছে পুলিশ।

নিহত আইরিন আক্তার জেলার আশুগঞ্জ উপজেলার লালপুরের মৃত ইদ্রিস মিয়ার মেয়ে ও সদর উপজেলার ভাদুঘরের সৌদি আরব প্রবাসী শামীম মিয়ার স্ত্রী। এই ঘটনায় নিহত আইরিনের দুই শিশু কন্যা তোবা (৬) ও সাবা (২) কে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার হাসপাতালে চিকিৎসার জন্যে পাঠানো হয়েছে।

ছোট ভাই রাহিমের অভিযোগ, সৌদিপ্রবাসী স্বামীর মানসিক অত্যাচারেই তার বোন দুই সন্তানসহ বিষপান করে আত্মহত্যা করেন।

আইরিনের ছোট ভাই রাহিম মিয়া জানান, আট বছর আগে ভাদুঘরের মুসলিম মিয়ার ছেলে শামীমের সঙ্গে তার বোনের বিয়ে হয়েছিল। পাঁচ বছর আগে তিনি ভগ্নিপতি শামীমকে নিজ খরচে সৌদি আরবে নিয়ে যান। কথা ছিল সৌদি থেকে ভগ্নিপতি খরচের টাকা পরিশোধ করবেন কিন্তু তা করেননি।

২ বছর পূর্বে সৌদি আরব থেকে ফেরা রাহিম বলেন, “আমি দেশে আসার আগে আমার দোকানের পজিশন শামীম বাকীতে নিতে চেয়েছিল। কিন্তু সে আমার আগের টাকা পরিশোধ না করায় আমি তাকে দোকানের পজিশন দেইনি। ”

এতে ভগ্নিপতি ক্ষিপ্ত হয়ে তার বোনকে তালাক প্রদানের হুমকি দিচ্ছিল। তিনি বলেন, “এরপর থেকে আমার বোনকে মানসিক ও শারীরিকভাবে অত্যাচার নির্যাতন করে আসছিল ভগ্নিপতি শামীম। সৌদি আরব থেকে আমার বোনকে মোবাইল ফোনে প্রায় সময়ই গালিগালাজ করতেন। আমার বোন প্রায়ই কান্নাকাটি করে বিষয়গুলো আমাদের জানাতেন।”

রাহিমের অভিযোগ, সৌদিপ্রবাসী স্বামীর মানসিক অত্যাচারেই তার বোন দুই সন্তানসহ বিষপান করে আত্মহত্যা করেন।

ওসি আসলাম জানান, পুলিশ গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্যে হাসপাতাল মর্গে রাখা আছে। দুই সন্তানকে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক সুমন ভূইয়া জানান, শিশু দুজনকে হাসপাতালে শিশু বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তারা দুজন এখনও শঙ্কামুক্ত নন, ৪৮ ঘণ্টা না গেলে কিছুই বলা যাচ্ছে না।

তারা কি বিষ খেয়েছে তা নিহতের ময়নাতদন্তের ভিসেরা রিপোর্ট পেলে বলা যাবে বলেও জানান এই চিকিৎসক।

By তালাশ বাংলা ডেস্ক

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ আক্কাস আল মাহমুদ হৃদয়

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *